আগে আমরা দেশি বিদেশি নানা টিভি চ্যানেল এর সাথে পরিচিত ছিলাম। সে সব চ্যানেলগুলো আলাদা আলাদা বিষয়ে জনপ্রিয় ছিল। সেই সব টিভি চ্যানেল এখনো আছে। কিন্তু আধুনিক ইন্টারনেট বাস্তবতায় চ্যানেল এর নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে ইউটিউব চ্যানেল।
এখন আমরা চাইলে নিজেরাই চ্যানেল তৈরি করে বিভিন্ন বিষয় ভিডিওর মাধ্যমে শেয়ার করতে পারি। যা মুহুর্তে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছে যায়। আর বর্তমানে ইউটিউব চ্যানেলে সৃজনশীল ভিডিও শেয়ার এর মাধ্যমে অর্থ আয় করা যায়।
আজকের অনলাইন দুনিয়ায় ভিডিও প্রচারণায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ইউটিউব। ছোট থেকে বড় প্রায় সব বয়সীদের কাছে ইউটিউব ভিডিওর চাহিদা রয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর অধিকাংশ লোক ইউটিউব এর মাধ্যমে ভিডিও দেখে থাকে। বর্তমানে কোন বিষয়ে আর্টিকেল পড়ার চাইতে ভিডিওর মাধ্যমে তথ্য গ্রহনের হার শীর্ষে রয়েছে। ইউটিউব সার্চ ইন্জিন হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিকভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হচ্ছে। ইউটিউব চ্যানেলে পৃথিবীর প্রায় সব বিষয়ে নানা ভিডিও প্রকাশিত হচ্ছে। শিক্ষামূলক ভিডিও থেকে শুরু করে রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলা, বিনোদনসহ সব বিষয়ের ভিডিও প্রচার হয় ইউটিউব এর মাধ্যমে।
তাই আপনি চাইলে আজ থেকেই ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে যে কোন বিষয়ে ভিডিও প্রচার করতে পারেন। ভিডিও আপলোড করে আপনি ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করে স্বাবলম্বী হতে পারেন অনায়াসে। বর্তমানে পেশা হিসেবে সারা বিশ্বে ইউটিউবার এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা সামনে আরো বেগবান হবে।
জীবনে সফলতা অর্জন করার জন্য শুধুমাত্র একটু সঠিক পরামর্শ দরকার। শুধু মাত্র সঠিক পরামর্শের অভাবে অনেক মেধাবি ছেলেমেয়ে তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে সফল হতে পারেনা।
আপনি যদি একটি কার্যকারী এবং সঠিক গাইডলাইন নিয়ে একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হতে চান তবে Goori Learning এর YouTube Content Creator Course টি হতে পারে আপনার জন্য সবচেয়ে ভাল এবং কার্যকারী অপশন।
আজকে আমরা নতুন ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরবো।
ইউটিউব চ্যানেল সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ না জেনে চ্যানেল তৈরি করলে পরবর্তীতে চ্যানেলটি বাতিল হ্ওয়ার আশংকা থাকে। তাই সঠিক উপায়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রথমেই আমরা ইউটিউব চ্যানেল সম্পর্কে জানবো।
ইউটিউব হচ্ছে ভিডিও শেয়ার ও দেখার ওয়েবসাইট, যাতে পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে সব ভাষার ভিডিও আপলোড হয়ে থাকে। এটা সম্পুর্ণ ফ্রি। আর এইসব ভিডি্ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে আপলোড করতে হয়। যারা ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করে তাদেরকে ইউটিউবার বলা হয়ে থাকে।
বর্তমানে ইউটিউব এ ভিডিও আপলোড এর মাধ্যমে আয় করাকে পেশা হিসেবে নেয়া হচ্ছে। তাই বলা যায়, যে মাধ্যম ব্যবহার করে ইউটিউব এ ভিডিও আপলোড করা হয় তা ইউটিউব চ্যানেল হিসেবে পরিচিত।আরো সহজ করে বলা যায়, আমরা প্রতিনিয়ত ইউটিউবে যে ভিডিও দেখি তা কোন না কোন চ্যানেল এর অধীনে আপলোড হয়ে থাকে। চ্যানেল ছাড়া ইউটিউব এ ভিডিও আপলোড করা যায় না।
ইউটিউব চ্যানেল এর ব্যাপারে জানার পর কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করবেন সে ব্যাপারে আলোচনা করবো। আপনি চাইলে খুব সহজেই একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারেন। তবে বর্তমানে ইউটিউব এর মাধ্যমে আয় করার সুযোগ রয়েছে,এই সুযোগটিকে যদি সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে চান তবে আপনার সঠিকভাবে নতুন ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম গুলি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।
নতুন ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য কতগুলো ধাপ তথা স্টেপ রয়েছে। সঠিকভাবে ধাপগুলো পার হওয়ার মাধ্যমে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে। তবেই তা ভবিষ্যতের জন্য ফলপ্রসু হবে।
ইউটিউব গুগল এর একটি প্রতিষ্ঠান। তাই ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য আপনার একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। যদি আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট না থাকে প্রথম কাজ হবে একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট খোলা। তারপরেই আপনি ইউটিউব চ্যানেল খোলার কাজ শুরু করতে পারবেন।
আপনি চাইলে দুই ধরণের ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন। ব্যক্তিগত ও ব্র্যান্ড হিসেবে ইউটিউব চ্যানেল। ব্যক্তিগত চ্যানেল তৈরি করতে সাধাররণ জিমেইল অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড দিয়ে ইউটিউব্ ওয়েবসাইটে লগইন করে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা যায়।
লগইন এর পর প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করে “Create a Channel” অপশনে ক্লিক করুন। সাধারণত আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্টে যে নাম থাকে সে নামে চ্যানেল খোলা হয়ে থাকে। আপনি চাইলে ভিন্ন নামে চ্যানেল খুলতে পারেন। সরাসরি আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট এর তথ্য নিয়ে এভাবে ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা যায়।
বর্তমানে যেহেতু ইউটিউব চ্যানেল এর মাধ্যমে আয় করা হয়, তাই দীর্ঘমেয়াদে ভালো ফলাফলের জন্য ব্র্যান্ড ইউটিউব চ্যানেল খোলা উচিত।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য প্রথম আপনাকে ইউটিউব এর ওয়েবসাইট এ যেতে হবে। আগে থেকেই আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্টে লগইন করা থাকলে আপনি সরাসরি ইউটিউবে লগইন করতে পারবেন। যদি জিমেইল অ্যাকাউন্ট লগইন করা না থাকে, আপনি ইউটিউব ওয়েবসাইট এ সাইন ইন অপশনে যাবেন। অতপর আপনার জিমেইল এর আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে ইউটিউব এ লগইন করবেন।
ইউটিউব এ লগইন করার পর ইউটিউব এর ড্যাসবোর্ড আপনার সামনে আসবে। যার ডান পাশে প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনার সামনে কতগুলো অপশন আসবে। তখন “Setting” অপশনে এ ক্লিক করার মাধ্যমে আপনি ইউটিউব চ্যানেল খোলার কাজ শুরু করবেন। এখন আপনি নতুন একটা পেজ পাবেন। যাতে “Your Channel” অপশন দেখা যাবে। ঠিক তার নিচে তিনটি অপশন দেখতে পাবেন। আর তা হলো-
তখন “Create a New Channel” অপশনে ক্লিক করলে “Create Your Channel Name” অপশন আসবে। সেখানে আপনার চ্যানেলের নাম দিতে হবে। নাম দেয়ার পরে ক্লিক করলেই আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হয়ে যাবে। আপনি নাম হিসেবে আপনার নামে অথবা আপনি যে নাম দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চান তা দিতে পারেন। এটা মূলত ব্র্যান্ড এর নামে হয়ে থাকে।
এখন আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হয়ে গেল। এখন আপনি চ্যানেলকে আপনার মতো করে সাজাতে পারেন। আর এটাকে চ্যানেল কাস্টমাইজ বলা হয়। আপনি এখন প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন। তারপর “Your Channel” অপশনে ক্লিক করুন। তখন উপরে ডান দিকে “CUSTOMIZE CHANNEL” অপশনটি পাবেন। এখানে ক্লিক করলে ইউটিউব এর বর্তমান থিম অনুযায়ী তিনটি অপশন থাকবে। আর তা হলো Layout, Branding, Basic Info
Basic Info তে ক্লিক করে আপনার চ্যানেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারবেন, আপনার সাথে যোগাযোগের মেইল, ভাষা, লিংক শেয়ার করতে পারবেন।
আপনি যদি “Branding” অপশনে ক্লিক করেন তখন তিনটি অপশন তথা প্রোফাইল পিকচার, ব্যানার ইমেজ ও ভিডিও ওয়াটারমার্ক অপশন দেখতে পাবেন। আপনি নিজের মতো করে এগুলো যোগ করতে পারেন।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর আপনাকে ভিডিও আপলোড করতে হবে। এজন্য আপনাকে ভালো মানের ও সৃজনশীল উপায়ে ভিডিও তৈরি করতে হবে। আপনার ভিডিও যেন ভিউয়ার এর চাহিদা অনুযায়ী এবং ইউনিক হতে হবে। যাতে সকল ধরণের কপিরাইট ইস্যু থেকে মুক্ত থাকে। কেননা ইউটিউবে নকল ভিডিও আপলোড দিলে আপনার চ্যানেল বাতিল হয়ে যাবে।
সাধারণত ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ এ ইউটিউব চ্যানেল খোলা সহজ। কিন্তু বর্তমানে মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলা যায়। এখন আমরা মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানবো।
মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য ক্রোম ব্রাউজার এ গিয়ে “Desktop Mode” অন করতে হবে। তারপর সাধারণ ইউটিউব চ্যানেল যেভাবে খোলা হয়ে থাকে তা অনুসরণ করতে হবে। সবগুলো ধাপ আমরা উপরে বর্ণনা করেছি। উল্লেখিত ধাপ অনুসরণ করেই মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলা যায়।
এছাড়া ইউটিউব অ্যাপ এর মাধ্যমে মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলা যায়। যদি্ও তা দিয়ে বৃহৎ পরিসরে কোন চ্যানেল তৈরি ও ম্যানেজ করা যাবে না। স্বল্প কাজে ব্যবহার করার জন্য মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলা যেতে পারে।
সে জন্য আপনাকে ইউটিউব অ্যাপে জিমেইল আইডি পাস্ওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। অতপর প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করে “Your Channel” অপশনে ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হয়ে যাবে। সেটিংস অপশনে গিয়ে আপনার মতো করে তা পরিবর্তন করতে পারবেন।
বর্তমান ডিজিটাল দুনিয়াতে ভিডিও শেয়ার এর অন্যতম সেরা মাধ্যম হলো ইউটিউব। যতই দিন যাচ্ছে ততই ইউটিউব ভিডিওর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউটিউব চ্যানেলে মানসম্মত, আকর্ষণীয় ভিডিও কন্টেন্ট আপলোডের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ আয় করা যাচ্ছে।
শুধুমাত্র আপনার সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে আপনিও দ্রুত এই মাধ্যমে সফলতা অর্জন করতে পারবেন। প্রয়োজন শুধু সঠিকভাবে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম জানা ও পরবর্তী পরিকল্পনার বাস্তবায়ন।
Answer these 5 questions to assess yourself and get a bonus 5 points.
Take the quiz now