MS Excel শিখে কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং করবেন? কতো টাকা ইনকাম করা যাবে?

MS Excel শিখে কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং করবেন? কতো টাকা ইনকাম করা যাবে?

আমি কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখব? কোনটা দিয়ে শুরু করব? মাসে কত টাকা ইনকাম করতে পারব? এরকম হাজার প্রশ্ন প্রায়ই নেট দুনিয়ায় ঘোরাফেরা করে। এর কারন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ডিমান্ডিং কাজের ভেতর ফ্রিল্যান্সিং অন্যতম। ফ্রিল্যান্সিং করতে চায় এমন মানুষের সংখ্যা অনেক হলেও কিভাবে করতে হয় সেটা অনেকেই জানে না। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই কোন একটা স্কিল ডেভেলপ করতে হবে আর সেই নির্দিষ্ট স্কিল নিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং জগতে ডাটা এন্ট্রি, এক্সেল, গ্রাফিক্স ডিজাউন, কন্টেন্ট রাইটিং থেকে শুরু করে অনেক স্কিল ডেভেলপ করার জায়গা আছে। আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় মাইক্রোসফট এক্সেল। আপনি মাইক্রোসফট এক্সেল কীভাবে শিখবেন, কি কি সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং বা জব করার সুযোগ আছে, কেমন আয় করা যায় ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা থাকবে এই আর্টিকেলে। 

চলুন জেনে নেয়া যাক মাইক্রোসফট এক্সেল শেখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য। সেই সাথে মাইক্রোসফট এক্সেল শেখার সম্পূর্ণ গাইডলাইন প্রাকটিক্যালি পেতে ঘুড়ি লার্নিং এর এই কোর্সটি (Professional Excel Masterclass) বেশ কার্যকরী। দ্রুত সফল হতে আজই যুক্ত হোন এবং সাবক্রিপশনের মাধ্যমে কম খরচে সকল কোর্সের এক্সেস নিতে পারেন। 

মাইক্রোসফট এক্সেল কেন শিখবেন?

মাইক্রোসফট এক্সেল এর মাল্টিপল ব্যবহারের কারনেই ফ্রিল্যান্সিং জগতে ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কম্পিউটার স্প্রেডশিটে ডাটা স্টোরেজ থেকে শুরু করে  বিশ্লেষণ পর্যন্ত করা হয়৷ স্প্রেডশিট ও ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার স্কিল আয়ত্ত করে অনেকেই এখন  ফ্রিল্যান্সিং শুরু করছেন।

মাইক্রোসফট এক্সেল এর কাজ শিখে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন?

মাইক্রোসফট এক্সেলে আপনি খুব সহজেই সারি এবং কলামের সাহায্যে ডাটা অর্গানাইজ করতে পারবেন। অনেকেই মনে করেন এক্সেলে শুধু টেবিল তৈরি বা বেসিক রিপোর্ট তৈরি করা যায়। তবে যারা এর নানাবিধ ফিচার সসম্পর্কে জানে, তারাই ফ্রিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করছেন। প্রতিদিনের হিসাব-নিকাশ, স্টোরেজ ও অ্যানালাইসিস, বাজেট বানানো, যে কোন অফিসের বছরের অর্থনৈতিক রিপোর্ট তৈরি ও অ্যানালাইসিস, কোম্পানির এমপ্লয়িদের স্যালারির হিসাব তৈরি করা ও তার ডাটা সংরক্ষন করা, কোন এমপ্লয়ির কত দিন ছুটি, উপস্তিতি সব কিছুর তথ্য সংরক্ষন করা সম্ভব মাইক্রোসফট এক্সেলে। এক কথায়, যে কোন কোম্পানির এইচ,আর থেকে শুরু করে একাউন্টস যে কোন ডিপার্টমেন্টে এক্সেল জানা মানুষের প্রয়োজন। আসুন জেনে নেই, কোন স্কিলগুলো থাকলে আপনি খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারবেন।

ডাটা এন্ট্রি এবং স্টোরেজ

ডাটা এন্ট্রি বা ডাটা স্টোর করার জন্য এক্সেলের বিকল্প নেই। যদি অনেক গুলো ডাটা একসাথে আপনাকে স্টোর করতে বলা হয়, তাহলে আপনি এর চেয়ে বেটার কোন অপশন আর পাবেন না। তবে অবশ্যই আপনাকে আগে এটা জেনে নিতে হবে, আপনি যে ডিভাইজটি ব্যবহার করছেন তার ক্যাপাসিটি ও মেমোরি কেমন। এখন অনেকেই লিড কালেক্ট এর কাজ করে থাকেন। এই কাজটি মূলত ডাটা এন্ট্রি ও সংরক্ষন এর। কোন ব্যক্তি বা কোম্পানি হয়ত আপনাকে হায়ার করবে এই কাজটির জন্য।  সাধারণত এই স্প্রেডশিটের ওয়ার্কশিট টেবিলে সর্বোচ্চ ১,০৪৮,৫৭৬টি সারি এবং ১৬,৩৮৪টি কলাম থাকতে পারে। এর মানে, আপনি চাইলে এই পরিমান ডাটা এন্ট্রি করতে পারবেন৷ 

ডাটা এন্ট্রির পর টুল ও ফর্মুলা ব্যবহার করে আপনি নানাবিধ কাজ করতে পারবেন। এছাড়াও ডাটা ফর্ম ফিচার ডাটা ইনপুট ও মনিটাইজ করার কাজ সহজ করে দেয়। আপনি যদি কোন কোম্পানির কাস্টমার রিলেশন রোল এ থাকেন তাহলে সহজেই কাস্টমারদের মেইল এর লিস্ট, ক্লাইন্টদের ডাটা সব কিছুই এক্সেল দিয়ে মেইনটেইন করতে পারবেন।

ক্যালকুলেশন করা

মাইক্রোসফট এক্সেলে এমন অনেক ফিচার ও ফর্মুলা আছে যা ডাটার সাথে রিলেটেড। ধারনা করা হয়, এখানে প্রায় ৪৫০ এরও বেশি ফাংশন আছে বিভিন্নভাবে ক্যাটেগরি করা। উল্লেখযোগ্য ফাংশনগুলো হলো: ফিন্যান্সিয়াল, , টেক্সট, লজিক, ডেট এন্ড টাইম ইত্যাদি। এগুলো আপনি আপনার প্রয়োজন মতো স্প্রেডশিট এর  কলাম,সারি বা সেলে ব্যবহার করতে পারবেন। যেসব কোম্পানি কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করে না ডাটা মেইনটেইন এর জন্য, তাদের একাউন্টস পুরোপুরি এক্সেল এর উপর ডিপেন্ডেন্ট। তাই এই স্কিল ডেভেলপ করে আপনি খুব সহজেই একাউন্টস এর কাজগুলো কমপ্লিট করতে পারবেন৷

ডাটা অ্যানালাইসিস এবং ইন্টারপ্রেটেনশন

ডাটা আ্যানালাইসিস মাইক্রোসফট  এক্সেলের অন্যতম অপরিহার্য অংশ। তথ্য স্প্রেডশিটে স্টোর করে রাখা ছাড়াও এক্সেল এর নানা ব্যবহার রয়েছে। ডাটা স্প্রেডশিটে আপডেট করার পর আপনি চাইলেই সূত্র ব্যবহার করে সহজেই হিসাব নিকাশ করে তা আবার অ্যানালাইসিসও করতে পারবেন। ম্যানুয়ালি করতে অবশ্যই আপনার অনেক বেশি সময় এর পিছনে দিতে হবে। আর টেবিল দিয়ে ডাটা খুব ভালোভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। 

আর এই ফিচারগুলো ব্যবহার করে অনেকগুলো ডাটা সহজে ইন্টারপ্রেট করা যাবে। বিশেষ করে আপনি যেই স্পেসিফিক ডাটা চাচ্ছেন সেটা সহজেই ফিল্টার বা সোয়াপ আউট করতে পারবেন। আর আপনি চাইলে স্প্রেডশিটে ডাটা গুছিয়ে রাখতে পারবেন প্রয়োজনমতো সহজেই।

রিপোর্টিং এবং ভিজ্যুয়ালাইজেশন

মাস শেষে রিপোর্ট যে কোন কোম্পানির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর ম্যানুয়ালি রিপোর্ট বানানো যে শুধু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার এমনটা নয়, ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও এখানে অনেক। অথচ, এক্সেলের ব্যবহার জানলে মাস এর শেষে রিপোর্ট আপনার জন্য খুবই সহজ। আর চার্ট, গ্রাফ বা অন্য ভিজ্যুলাইজেশন ব্যবহার করে আপনার রিপোর্টকে করে তুলুন আরো আকর্ষণীয় এবং অর্থবহ৷ নির্ভুল রিপোর্ট এর পাশাপাশি একটি গুছানো রিপোর্টও কোম্পানিতে আপনার পারফরম্যান্স ভালো করার চাবিকাঠি। পছন্দমতো  একটা টেমপ্লেট সার্চ দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারবেন  রিপোর্ট। আপনি চাইলে রিপোর্ট এর ভেতর টেবিলের রঙ পরিবর্তন, এক্সেল এর ভেতর টেক্সট কমেন্টও যুক্ত করতে পারবেন যদি আপনার কোন স্পেশাল নোট লেখার দরকার পরে।

অ্যাকাউন্টিং এবং বাজেটিং

আপনি যদি কোন কোম্পানির একাউন্টস ডিপার্টমেন্টে থাকেন বা আপনার যদি বছরের বাজেট করার দায়িত্ব থাকে, তাহলে এক্সেল শিখা আপনার জন্য বাধ্যতামূলক। আবার এই দুই রোলে প্রায়ই মাইক্রোসফট এক্সেল ব্যবহার করে কাস্টমারদের  রেকর্ড দেখার দরকার পরে। অনেক ডাটা অ্যানালাইসিস করার পরেই বাজেট করতে হয়। ডাটা খুঁজে পাওয়ার এর চেয়ে সহজ উপায় আর নেই। শুধু তাই নয়, ম্যানাজার পজিশনে থাকলে খুব সহজেই ডাটা দেখে ক্লায়েন্টের সাথে ভালো সম্পর্কও গড়ে তোলা যায়৷ তাছাড়া, এই স্প্রেডশিট ব্যবহার করে আপনি বিজনেস এর যাবতীয় প্রসেস সামলাতে পারবেন। যেমন: বিল পরিশোধ করা, প্রফিট, লস ছাড়াও এক্সপেন্স  ট্র‍্যাক করা ইত্যাদি। এছাড়াও খুব সহজেই ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্ট তৈরি , একাউন্টিং এর যাবতীয় খুটিনাটি, বিজনেস অ্যানালাইসিস, এমপ্লয়িদের প্রমোশন রেকর্ড ট্র‍্যাক করা যায়। 

ক্যালেন্ডার এবং শিডিউল

যে কোন কোম্পানির যে কোন পোস্টেই আপনি কাজ করুন না কেন, ক্যালেন্ডার মেইনটেইন করা আপনার নিজের জন্যই জরুরি। আর মাইক্রোসফট এক্সেলে এমন অনেক অটো ফিচার আছে, যেগুলো দিয়ে আপনি তারিখ ও দিন ট্র‍্যাক করতে পারবেন৷ আর পছন্দমতো টেমপ্লেট দিয়ে চাইলে  ক্যালেন্ডারও বানাতে পারেন। একবার এক্সেলে ইনপুট দিয়ে দিলেই বারবার টাইপ করে দিন, তারিখ বসাতে হবে না। ক্যালেন্ডার বানানোর পর আপনার যে তারিখে  বিশেষ কোনো টাস্ক থাকবে বা মিটিং থাকবে বা রিমাইন্ডার দরকার, আপনি চাইলে সেখানে নোট বা কমেন্ট যুক্ত করতে পারবেন। আপনি আপনার নিজের মান্থলি গোল সেট করতে পারবেন নিমিষেই আর কোম্পানিও তাদের গোল সেট করতে পারবে।

উপরের স্কিলগুলো আয়ত্ত করতে পারলেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারবেন। আর মাইক্রোসফট এক্সেল শিখে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পর যদি আপনি দক্ষতা বাড়াতে চান, তাহলে ভবিষ্যতে লাভ আপনারই। যেমন মনে করুন - 

দ্রুত পদন্নোতি 

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পর আপনার নিয়োগকর্তা এমন কর্মীকে লং টাইম রাখতে চাইবেন যার এই স্প্রেডশিট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান আছে৷ কারণ এতে করে আপনি কত ভালো আ্যানালাইসিস করতে পারেন তার সম্পর্কে একটা ধারণা নিয়োগকারী বুঝতে পারেন। এক্সেলের দক্ষতা আপনাকে সেই কোম্পানির একটা ভালো এসেটে পরিণত করবে৷

দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ 

ডাটা ঠিকঠাকভাবে স্টোর করা মাইক্রোসফট এক্সেল ছাড়া প্রায় অসম্ভব বললেই চলে। ম্যানুয়ালি করতে গেলে অনেকটা সময়সাপেক্ষ একটা কাজ। কিন্তু আপনি যখন এক্সেল এ কাজটি করবেন, একইসাথে হিসাব রাখার পাশাপাশি ভুল করার হারও অনেকাংশেই কমিয়ে দিবে। একসাথে আপনি অনেক ডাটা অ্যানালাইসিস করতে পারবেন৷ আর সবচেয়ে ভালো হয়, আপনি যদি এর সমস্ত ব্যবহার শিখে নিতে পারেন। এজন্যই চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার সময় এই স্কিল এর উপর এখন অনেক জোড় দেওয়া হয়। 

ডাটার সঠিক ব্যবহার:

মাইক্রোসফট এক্সেল দিয়ে আপনি অনেক ডাটা একসাথে সংরক্ষণ করতে পারবেন৷ আপনার যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য ডাটা স্টোরেজের দরকার পরে তাহলে আগের কোন  ডাটার সাথে নতুন ডাটার সম্পর্কও খুব সহজেই খুঁজে বের করা যাবে।

এটি মাইক্রোসফট অফিসের একটি অংশ তাই পাওয়ার পয়েন্টে বা  মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এ সহজেই লিখিতভাবে ট্রান্সফার করা যায়৷ শুরুতে এই কাজ আপনার কাছে জটিল বলে মনে হতে পারে তবে একবার শিখে গেলে জীবন অনেক সহজ হয়ে যাবে! এটা আপনার কোম্পানিতে  কর্মদক্ষতা ও পদন্নোতিতে ব্যাপক সাহায্য করবে।

এভাবে মাইক্রোসফট এক্সেল আপনাকে চাকরিতে সহায়তা করবে এবং আপনাকে ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ করারও ব্যাপক সুযোগ থাকছে। 

মাইক্রোসফট এক্সেল শিখে কতো টাকা ইনকাম করা যায়? 

সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আপনি ২৫-৪৫ হাজারের বেশি ইনকাম করতে পারবেন। তবে আপনাকে অভিজ্ঞ হতে হবে এবং টাইপিং স্পিড বৃদ্ধি করতে হবে। এমনকি দেশে থেকে আইটি প্রতিষ্ঠানে বা সেক্টরে মাইক্রোসফট এক্সেলের বেশ চাহিদা আছে। সেখানে আপনি ২০ হাজারের বেশি দিয়ে জব শুরু করতে পারবেন। 

আবারও বলছি, মাইক্রোসফট এক্সেল শেখার সম্পূর্ণ গাইডলাইন প্রাকটিক্যালি পেতে ঘুড়ি লার্নিং এর এই কোর্সটি (Professional Excel Masterclass) বেশ কার্যকরী। দ্রুত সফল হতে আজই যুক্ত হোন এবং সাবক্রিপশনের মাধ্যমে কম খরচে সকল কোর্সের এক্সেস নিতে পারেন। 

শেষ কথা

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার শুরুতে যখন আপনি মার্কেটপ্লেসে কাজ করার ট্রাই করবেন, তখন দেখবেন প্রথমেই জানতে চাইবে তারা আপনার কোন স্কিলটা আছে অথবা আপনি কোন ক্যাটেগরির কাজের জন্য ক্লায়েন্ট খুঁজছেন। আপনার যদি মাইক্রোসফট এক্সেল জানা থাকে, তাহলে আপনার সামনে অনেক এন্ট্রি লেভেল এর কাজ থাকবে। এন্টি লেভেল কাজের জন্য হলেও এক্সেল জানাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে তখনই কোন ক্লায়েন্ট হায়ার করবে যখন আপনি এক্সেল এর মতো কোন ব্যাসিক স্কিল বিষয়ে বিশদ জ্ঞান রাখবেন। শুধু তাই নয়, প্র‍্যাক্টিকালিও আপনি কাজ করতে জানলেই কেবল মার্কেটপ্লেসে কাজের জন্য এপ্লাই করবেন।

Related Post

No data found